মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, গাজীপুরঃ
গাজীপুরে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ঘরে ঢুকে
কলেজ ছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম। এ সময় বাধা দিতে গেলে তার মা ও তিন বোনকেও কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন নিহতের বাবা।
সোমবার (৮ মে) দিবাগত রাতে গাজীপুর সদর সালনা এলাকায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ইমাম সাইদুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন। তিনি পার্শ্ববর্তী টেকিবাড়ী জামে মসজিদের ইমাম। ইমামতির পাশে সেখানে ছোট ছেলেমেয়েদের কোরআন শিক্ষা দিতেন।
নিহতের নাম রাবেয়া আক্তার (২১) গাজীপুর দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফের মেয়ে। তিনি ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
আহতরা হলেন, রাবেয়া আক্তারের মা ইনসুরেত নেছা (৫০), বোন হাবিবা (১৮), খাদিজা (১৫) ও জান্নাত (১৩)।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানাযায়, কুমিল্লার হোমনার শ্রীমতি এলাকার বাসিন্দা আবদুর রউফ সালনা বাজারে আরএফএল প্লাস্টিকের শো-রুমে চাকরি করেন। যার কারণে স্ব-পরিবারে তিনি সালনা এলাকায় বসবাস করতেন। তার বড় মেয়ে রাবেয়া আক্তার ২০২০ সালে জয়দেবপুর সরকারি মহিলা কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। আবদুর রউফ ছোট দুই মেয়ে খাদিজা (১৫) ও জান্নাতকে (১৩) কোরআন শেখানোর জন্য মসজিদের ইমাম সাইদুল ইসলামকে গৃহ শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করেন।
সাইদুল ইসলাম তার ছোট দুই মেয়েকে পড়ানোর জন্য বাসায় যাওয়া-আসার সুবাদে তার বড় মেয়ে রাবেয়া আক্তারের দিকে কু-নজর পড়ে। কিছু দিন পরে সাইদুল রাবেয়াকে বিয়ে করার জন্য তাদের কাছে প্রস্তাব দিলে তারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এতে সাইদুল ক্ষীপ্ত হয়ে বড় মেয়ে রাবেয়াকে বিভিন্নভাবে বিয়ে করার জন্য ফুঁসলাতে থাকেন। তার খারাপ উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে তাকে বাসায় এসে পড়াতে নিষেধ করে দেন।
এতে সাইদুল ক্ষীপ্ত হয়ে গত সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাসায় ঢুকে রাবেয়া আক্তারকে ছুরি দিয়ে মাথায়, গলায়, হাতে, পায়ে এলোপাতাড়িভাবে কোপাতে থাকেন। তার চিৎকারে মা ও বোনেরা গিয়ে বাধা দিলে সাইদুল ছুরি দিয়ে তাদেরকেও আঘাত করে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় গুরুতর অবস্থায় রাবেয়াকে স্থানীয়রা শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে আইসিইউতে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তার মা ইনসুরেত নেছা। আহত হয়েছে ছোট তিন বোন। এ ঘটনায় রক্তাক্ত ছুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গাজীপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সকালে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তাক্ত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। আসামি সাইদুল ইসলামকে আটকের চেষ্টা চলছে।