আজ ১০ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

গোদাগাড়ীতে দিগুণ সরিষা চাষে মাঠ জুড়ে হলুদের সমারোহ।

রাজশাহী প্রতিনিধি:

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ভোরের সূর্য সরিষা ফুলের জমিতে পড়ার সাথে সাথে চকচক করছে হলুদ রং। প্রকৃতি সেজেছে অপরুপ সাজে। প্রজাপতির দল ছুটে বেড়াচ্ছে ফুলে ফুলে। মৌমাছির ভনভনানিতে মুখরিত সরিষার বিস্তৃত মাঠ। সবুজ শ্যামল প্রকৃতির ষড়ঋতুর এই দেশে ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে যেমনি প্রকৃতির রূপ বদলায়, তেমনি বদলায় ফসলের মাঠ। গোদাগাড়ী উপজেলার মাঠ জুড়ে এখন হলুদ সরিষা ফুলের সমারোহ। দুচোখ যেদিকে যায়, সে দিকে শুধু মনজুড়ানো সরিষা ফুলের দৃশ্যের দেখা মেলে। গাঢ় হলুদ বর্ণের সরিষার ফুলে ফুলে মৌমাছিরা মধু সংগ্রহের জন্য গুন গুন করছে। চলছে মধু আহরণের পালা। মৌমাছিরা মধু সংগ্রহে মাঠে নেমেছে। শীতের শিশির সিক্ত মাঠভরা সরিষা ফুলের গন্ধ বাতাসে ভাসছে। মানুষের মনকে পুলকিত করছে। সরিষার ক্ষেতগুলো দেখে মনে হয় কে যেন হলুদ চাদর বিছিয়ে রেখেছে। এখন শুধু দিগন্ত জুড়ে সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য শোভা পাচ্ছে।

এদিকে সরিষার দাম ও তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরা ঝুকেছে সরিষা চাষে। চলতি মৌসুমে গোদাগাড়ী উপজেলায় গত বছরের তুলনায় দ্বিগুন বেড়েছে সরিষার চাষ।গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ২শ’ ৪০ হেক্টোর। এখন পর্যন্ত প্রায় ১৪ হাজার ১শ” ২০ হেক্টোর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। গত বছর এ উপজেলায় সরিষা চাষ হয়েছিল ৭ হাজার ৪শ’ ২০ হেক্টোর। কিছু কিছু জমিতে মধু আহরণের জন্য চাষীরা মধু সংগ্রহের বাক্স বসিয়েছেন। তেল বীজ, মধুর পাশাপাশি কৃষকরা সরিষা থেকে উন্নত গো-খাদ্যও তৈরী করতে পারবে বলে আশাবাদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।সরিষা প্রধানত আবাদ হয় দোআঁশ ও বেলে-দোআঁশ মাটিতে, বিশেষ করে নদী বিধৌত এলাকায়। কার্তিক-অগ্রাহায়ণ মাসে দু-একটি চাষ বা বিনা চাষেই জমিতে ছিটিয়ে সরিষা বীজ বপন করা হয়। সরিষা চাষে সেচ ও সার লাগে কম। সরিষার পাতা একটি উৎকৃষ্ট জৈব সার হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। তেল নেয়ার পর অবশিষ্ট অংশ গরুর খৈল হিসেবে খাওয়ানো হয়। এতে প্রচুর পুষ্টি থাকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গোদাগাড়ী উপজেলার সুশাডাং, বোগদামারি, কালিদিঘি, পিরিজপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বির্স্তীণ মাঠ হলুদে ছেয়ে গেছে। কৃষক রজব মন্ডল বলেন, তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে তেলের চাহিদা মিটাতে গোদাগাড়ী কৃষি বিভাগের পরামর্শে আমি সরিষা আবাদ করেছি। আশা করছি, সরিষা চাষে লাভবান হতে পারব।
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আবুল হোসেন বলেন, সোয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে তেলের চাহিদা মিটাতে কৃষকদের সরিষা চাষে উদবদ্ধ করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের সরিষা চাষে পরার্মশ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগের পরার্মশে এ উপজেলায় বৃদ্ধি পেয়েছে সরিষা চাষ। সরিষার বীজ, সার, উপকরণ সহায়তা দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। সরিষা চাষ করে খুবই লাভবান হওয়া যায়, সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করা, সরিষা শাকসহ সরিষা থেকে ভালোমানের তেল উৎপাদন করা যায়।


Deprecated: Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/somoyerb/public_html/wp-includes/functions.php on line 5059

Comments are closed.

     এই বিভাগের আরো সংবাদ