রাজশাহী প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারায় বসতবাড়ির বিক্রয় সম্পত্তি ফেরত চেয়ে আদালতে অগ্রক্রয়ধিকার মামলা দায়ের করেছে সমসের দেওয়ান নামের এক ভূক্তভোগী। উপজেলার আউচপাড়া ইউনিয়নের রমপাড়া গ্রামের মৃত ময়েজ উদ্দীন দেওয়ানের পূত্র মোঃ সমসের দেওয়ান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তার দুই স্ত্রীর তিন মেয়ে এক ছেলে সন্তান নিয়ে বাগমারাধীন তকিপুর মৌজার আর এস ৩৩৮ নং খতিয়ানের ৮৪৭ নং দাগে ঘরবাড়ি নির্মান করে এই বসতবাড়ির সংলগ্ন দক্ষিনপাশে একই দাগে সমসের আলী বিভিন্ন গাছপালা বাগানবাড়ি তৈরী করে পৈত্রিকসূত্রে এজমালিতে দীর্ঘদিন যাবৎ ভোগদখল আসছিল বর্তমানেও তার দখলে আছে। জানা যায়,সমসের দেওয়ান এর জমানো টাকা থেকে মাটির ঘরবাড়ি ভেঙ্গে নালিশী সম্পত্তির উপর ইট দিয়ে ঘর নির্মান করবে বলে জানা গেছে। গত রমজান মাসে গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের বিজন সরকার ইটভাটা থেকে ২৫,০০০ (পঁচিশ হাজার) ইটক্রয় করে বিবাদমান জায়গার উপর সমসের দেওয়ান গচ্ছিত রেখেছে। উক্ত ইট বিবাদমান জায়গার ক্রয়সূত্রে দাবিদার মোঃ আলতাফ হোসেন তার নিজ নামে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন পায়তারা শুরু করেছে। আরো জানা যায়, দখলে থাকা অবস্থায় ঐ দাগের ওয়ারিশ কোন ওয়ারিশগনকে অবগত না করে শরীক প্রজার বাহিরে গোপনে আলতাফ হোসেন/আন্জুয়ারা বেগমের নিকট সম্পত্তির অংশটুকু বিক্রি করে দেয়। এতে দলিলে ক্রয়সূত্রে মালিকরা বসতভিটার ঐ জায়গা থেকে সমসের দেওয়ান সহ তার পরিবারকে উচ্ছেদ করতে বিভিন্ন ভয়ভীতি হুমকি ধামকি দেখিয়ে দখল করার পায়তারা করছে। ইতিপূর্বে বিভিন্ন এন্জিও শাখায় ঋন গ্রহন করে দারিদ্রের কোষাঘাতে পড়ে লোনের ক্ষুধা মেটাতে পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে মানবেতর জীবন যাপন শুরু করে দিশেহারা হয়ে পড়ে এই সমসের দেওয়ান। নিজের ভোগদখলীয় বিবাদমান বসতভিটা ছাড়া অবশিষ্ট কোন জায়গা জমি নেয় বললেই চলে। পরে বিবাদমান সম্পত্তি নিয়ে সুষ্ঠ সমাধানে গ্রাম্য সালিশে বৈঠক হলে আদালতের মাধ্যমে দলিলে ক্রয়সূত্রে মালিক আলতাফ হোসেনকে সম্পত্তির ন্যায্য মূল্য ফিরিয়ে দিতে রাজি হন সমসের দেওয়ান। উভয়পক্ষের সম্মতিতে আদালতে অগ্রক্রয়ধিকার মামলা দায়ের করা হয়। মামলার নোটিশ বিবাদি আলতাফ হোসেন পাওয়ার পরেও সম্পত্তির ন্যায্য মূল্য আদালত কর্তৃক জমাকৃত সমুদয় টাকা এখন পর্যন্ত উত্তোলন করেনি বলে জানা গেছে।
আদালতের মামলা সূত্রেঃ বাগমারা থানাধীন তকিপুর মৌজার আর এস ৩৩৮ নং খতিয়ান এর মালিক ময়েজ উদ্দিন,আঃ কাসেম দেওয়ান,আঃসালাম দেওয়ান,আঃ সাত্তার দেওয়ান তাদের নাম সুদ্ধভাবে খতিয়ানে প্রস্তুত আছে। কাশেম দেওয়ান তার সমুদয় সম্পত্তি ময়েজ উদ্দিন দেওয়ানের ৫ পূত্রের নিকট বিক্রয় করে নিঃস্বত্ব দখল শুন্য হন। ময়েজ উদ্দিন দেওয়ান তার অংশের সম্পত্তি এজমালিতে ভোগদখল কালে মারা গেলে ৫ পূত্র সিরাজ,সমসের,সামাদ,মান্নান,শরিফুল ইসলাম দেওয়ানগন ওয়ারিশ হয়ে এজমালিতে ভোগদখল করে আসছেন। শরিফুল ইসলাম তার অংশের সম্পত্তি ভোগগখল করা কালে ভাই সমসের দেওয়ান কে না জানিয়ে গোপনে আলতাফ হোসেন/আন্জুয়ারা বেগমের নিকট বিক্রয় করে। অপরদিকে গত ২৫শে মে ২০২১ইং তারিখে নালিশী সম্পত্তি ক্রয় করেছেন বলে সমসের দেওয়ান কে জানান। যার বিক্রয় কবলা দলিল নাম্বার ২৩৮৩/২০২১। মামলার বাদি একজন শরীক প্রজা এবং নালিশী সম্পত্তি অগ্রক্রয়ধিকার মূলে হকদার। বিবাদমান সম্পত্তির মূল্য দলিলে লিখিত মূল্যে ১,৫৭,০০০/-টাকা ২৫% হারে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩৯,২৫০ টাকা এবং ৮% হারে এক বছর ৩ মাসের সুদ বাবদ ১৫,৭০০ টাকা চালান নং ৬৫ যোগে জমা দিয়ে আনয়ন করলেন এবং নির্ধারিত ৩০০ টাকার কোর্ট ফি প্রদানে প্রিয়েমশন /অগ্রক্রয়ধিকার মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অপরদিকে আলতাফ হোসেন নালিশী সম্পত্তির উপর আইনজীবির মাধ্যমে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে রাজশাহী বাগমারা থানা সহকারী জজ আদালত বরাবর আবেদন করলে আদালত আমলে নিয়ে অত্র দরখাস্ত নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পক্ষদ্বয়কে স্ব-স্বঅবস্থানে থাকার নির্দেশ প্রদান করেছেন।